❖ [যিকর নং: ০১] সুবহানাল্লাহ্, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ও আল্লাহু আকবার—প্রতিটি ১০০ বার করে পড়া।
রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—
◉ যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে, সে ১০০ ক্রীতদাস মুক্ত করার সওয়াব পাবে;
◉ যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ বলবে, সে আল্লাহর রাস্তায় যু[দ্ধে]র জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মু[জা]হিদ প্রেরণের সওয়াব পাবে;
◉ যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে, সে ১০০টি মাকবুল (কবুলকৃত) উট কুরবানির সওয়াব পাবে;
◉ যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে, সে এত সওয়াব পাবে, যার ফলে আসমান ও যমিন পূর্ণ হয়ে যাবে। [ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ২/১২৫২; আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৬/৩৪৪; হাদিসটি হাসান]
❖ [যিকর নং: ০২] একটি গুরুত্বপূর্ণ তাসবিহ কমপক্ষে ১০০ বার পড়ার চেষ্টা করা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার পড়বে—
لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
.
[মোটামুটি উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর]
অর্থ: আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি এক; তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব এবং প্রশংসা কেবল তাঁরই; তিনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
◉ সে ১০টি গোলাম মুক্ত করার সওয়াব পাবে;
◉ তার জন্য ১০০ সওয়াব লেখা হবে;
◉ তার ১০০ গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে;
◉ ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে এবং (সন্ধ্যায় বা রাতে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে)
◉ ওই দিনের হিসেবে কেউ তার চেয়ে উত্তম সওয়াবের কাজ করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, ওই ব্যক্তি সক্ষম হবে, যে এর চেয়ে বেশি পড়বে।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৩২৯৩; আবু দাউদ, আস-সুনান: ৫০৭৭]
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘‘যে ব্যক্তি প্রত্যেকটি দশবার করে বলবে, সে ইসমাঈল (আ.)-এর বংশের চারজন ক্রীতদাস মুক্ত করে দেওয়ার নেকি পাবে।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪০৪]
❖ [যিকর নং: ০৩] লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ খুব বেশি পরিমাণে পড়তে থাকা।
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৩৮৩; হাদিসটি হাসান]
❖ [যিকর নং: ০৪] ‘সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়া বিহামদিহি’ বেশি পরিমাণে পাঠ করা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি—
سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيْمِ وبِحَمْدِهِ
(সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়া বিহামদিহি—মহান আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত; প্রশংসা কেবল তাঁরই) পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ করা হয়।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৪৬৪; হাদিসটি হাসান সহিহ]
❖ [যিকর নং: ০৫] ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম’ বেশি করে পড়া।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা উচ্চারণে সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী এবং আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তা হলো—
سُبْحَانَ اللّٰهِ وبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيمِ
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বি‘হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম।
অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, প্রশংসা কেবল তাঁরই; মহান আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত। [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪০৬]
❖ [যিকর নং: ০৬] ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ ১০০ বার বা আরো বেশি পাঠ করা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যদি কেউ দিনের মধ্যে ১০০ বার পড়ে—
سُبْحَانَ اللّٰهِ وبِحَمْدِهِ
(সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি—আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত; তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা) তার সকল (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ৬৪০৫]
❖ [যিকর নং: ০৭] লা ‘হাউলা ওয়া লা কুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’ বেশি বেশি পাঠ করা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ওহে আব্দুল্লাহ ইবন কায়েস! আমি কি জান্নাতের এক রত্নভাণ্ডার সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো না?” আমি বললাম, নিশ্চয়ই হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, “তুমি বলো—
لَا ﺣَﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﻗُﻮَّﺓَ ﺇِﻻَّ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ
[উচ্চারণ: লা ‘হাউলা ওয়ালা ক্বুও-ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ]
অর্থ: আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় নেই এবং (নেক আমল করার) কোনো শক্তি কারো নেই।’’ [বুখারি আস-সহিহ: ৪২০৬; মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭০৪]
রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমরা রামাদানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’’ [বুখারি, আস-সহিহ: ২০২০]
সুতরাং আজ রাতেও আমরা সাধ্যানুযায়ী নেক আমল করবো ইনশাআল্লাহ্। প্রকৃতপক্ষে, শেষ দশকের প্রতিটি রাতই সম্ভাবনাময়, যদিও বেজোড় রাতগুলোর সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর, আজ ২৫ তম রাত। সুতরাং, অবহেলা না করি।
Leave a Reply