মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ লাক্ষাদ্বীপেও চলছে মুসলিমদের ধ্বংস করার প্রয়াস

ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য জম্মু ও কাশ্মিরের পরে এখন আরো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপেও সাম্প্রদায়িক শক্তি চোখ রাঙাচ্ছে। বিভিন্নভাবে অভিযোগ উঠছে যে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক ও বিজেপি নেতা প্রফুল খোদা প্যাটেল ৯৭ শতাংশেরও বেশি মুসলিম জনসংখ্যাসম্পন্ন এই দ্বীপের জীবনযাপন ও চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন।

ফলে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসককে নিয়ে তৈরি হয়েছে মারাত্মক রাজনৈতিক অস্থিরতা। নতুন প্রশাসক প্রফুল প্যাটেলের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। গরুর গোশতে নিষেধাজ্ঞা, দুই সন্তানের অধিক সন্তান থাকলে অভিভাবকের পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই দ্বীপপুঞ্জে অপরাধের হার একেবারে নেই বললেই চলে। সেখানে গুন্ডাদমন আইন প্রণয়ন নিয়েও শোরগোল হচ্ছে। এছাড়াও নতুন আইনে উন্নয়নের কাজে যেকোনো জমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে প্রশাসনের।

প্রশাসকের সিদ্ধান্ত নিয়ে পার্শ্ববর্তী কেরালার সিপিএম-কংগ্রেস একযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সোমবারই কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, প্রশাসকের পদক্ষেপ লাক্ষাদ্বীপের সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনযাপনকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, এই ধরনের আইন কখনো মানা যায় না। লাক্ষাদ্বীপের সঙ্গে কেরালার দীর্ঘ দিনের আত্মীয়তা।

কিন্তু সেটাকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি ছাড়াও বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং কংগ্রেসের বহু এমপি, সেই সঙ্গে লাক্ষাদ্বীপের একমাত্র এমপি মোহাম্মদ ফয়জল এই স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। প্যাটেলের স্বৈরাচারী, জনবিরোধী নীতির জেরে কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখে তার অপসারণের দাবি তুলেছেন অনেকেই। এমনকি তার সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করার আওয়াজও উঠেছে।

স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ ফয়জল জানিয়েছেন যে, চলতি বছরের জানুয়ারির পর থেকে প্যাটেলের কারণে প্রায় ৩০০ লোক কাজ হারিয়েছেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লোকেরা তার প্রবর্তিত নীতিমালার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুরু করে এবং তার কয়েক দিন পরেই কাজ হারাতে শুরু করেন অনেকেই।

হায়দরাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও প্রশাসকের দিকে আঙুল তোলেন। তিনি টুইট করেছেন, যে মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার লাক্ষাদ্বীপ ও সেখানকার জনগণের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। তিনি লাক্ষাদ্বীপের কাছ থেকে দ্বীপবিরোধী সমস্ত আইন প্রত্যাহার এবং প্যাটেলকে প্রশাসকের পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। এদিকে, গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #SaveLakshadweep ট্রেন্ড শুরু হয়। প্রধানত লাক্ষাদ্বীপ ও কেরলের মানুষেরা এই ট্রেন্ডিং শুরু করেন প্যাটেলের স্বৈরাচারী নীতির অবসানের জন্য।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*