করোনায় মৃত্যু আরও বেড়েছে

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৪০ জনের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৯৫৬ জনের। ওই সময় করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৬০ জনের। সেই হিসাবে ওই দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) নতুন শনাক্ত রোগী কমলেও করোনায় মৃত্যু বেড়েছে।

এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ৪১ হাজার ৮৭ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৩৪৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬৬ জন। এদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭১৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপর রাজশাহী বিভাগে মারা গেছেন ১৩ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, ঢাকা বিভাগে ১০ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন করে মারা গেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৮৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এর আগের দিন এটি ছিল ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।

এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল রয়েছে। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন ধরে সারা দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*