তালাক

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “হে নবী! তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও তখন তাদেরকে তালাক দাও তাদের ‘ইদ্দাতের প্রতি লক্ষ্য রেখে, আর ‘ইদ্দাতের হিসাব সঠিকভাবে গণনা করবে।” (সূরাহ আত্‌-ত্বলাক ৬৫/১)

[২৪] হালাল জিনিসের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট জিনিস হচ্ছে ত্বলাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ। যদিও এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত তবুও স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রাখতে না পারলে ইসলামে এ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের বিচ্ছেদ ঘটানোর সুযোগ করে দেয়া হয়েছে ত্বলাকের মাধ্যমে। এখানে ত্বলাক সংক্রান্ত কয়েকটি নিয়ম উধৃত করা হলো।
১। কোন স্ত্রীর মধ্যে স্বামীর প্রতি অবাধ্যতার লক্ষন দেখা দিলে স্ত্রীকে সদুপদেশ দিতে হবে। প্রয়োজনে তার শয্যা ত্যাগ করতে হবে, শিক্ষামূলক প্রহার করতে হবে। (এ মর্মে সূরা আন-নিসাঃ ৩৪ আয়াত দেখুন)
২। যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদের আশঙ্কা দেখা দেয় তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন ও স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত করতে হবে। “তারা দু’জন সংশোধনের ইচ্ছে করলে আল্লাহ্‌ তাদের উভয়ের মাঝে সামঞ্জস্য করে দেবেন।” (সূরা আন-নিসাঃ ৩৫)
৩। যদি তালাক দেয়া একান্তই অপরিহার্য হয়, তাহলে নারী যে সময়ে ঋতুমুক্তা ও পরিচ্ছন্না হবে, সে সময় যৌন মিলনের পূর্বেই স্বামী তাকে এক তালাক দিবে আর স্ত্রী তালাকের ইদ্দত তথা তিন ঋতু বা ঋতুমুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করবে- বাকারাঃ ২৮। এ ইদ্দতের মধ্যে যাতে পুনর্মিলন ও সন্ধির সুযোগ থেকে যায় সে জন্য স্বামী স্ত্রীকে তার গৃহ থেকে বহিষ্কৃত করবে না, আর স্ত্রীও গৃহ থেকে বের হয়ে যাবে না। অবশ্য স্ত্রী যদি খোলাখুলি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাহলে স্বতন্ত্র কথা। (সূরা আত-ত্বলাক-১)
৪। স্বামী যদি স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চায় [এক তালাক অথবা দু’তালাকের পরে] তাহলে তাকে ইদ্দতের মধ্যে স্বাচ্ছন্দে ফিরিয়ে নিতে পারবে। এ শারঈ রীতির আরেকটি বড় সুবিধা এই যে, এক তালাক অথবা দু’তালাকের পরে ইদ্দতের সীমা শেষ হয়ে গেলেও স্বামী তার তালাকদত্তা স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে নতুনভাবে মাহর নির্ধারণ ও সাক্ষীর মাধ্যমে। অন্য পুরষের সাথে স্ত্রীটির বিবাহিতা হওয়ার কোন প্রয়োজন হবে না। এ অবস্থায় পূর্ব স্বামী তাকে বিবাহ করতে না চাইলে স্ত্রী যে কোন স্বামীর সঙ্গে বিবাহিতা হতে পারবে।
৫। আবদুল্লাহ বিন উমার বর্ণিত আবূ দাঊদের হাদীস হতে জানা যায়, কেউ ঋতু অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে সে তালাককে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তালাক হিসেবে গণ্য করেননি। কাজেই কেউ তালাক দিতে চাইলে স্ত্রীর পবিত্রাবস্থায় তালাক দিতে হবে।
৬। কেউ স্ত্রীকে এক তালাক দিয়ে ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলে একটি তালাক বলবৎ থাকবে। স্ত্রীর ঋতুমুক্ত অবস্থায় স্বামী দ্বিতীয় তালাক দিয়ে স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে আবার ফিরিয়ে নিতে পারবে। এক তালাক বা দু’ তালাক দিয়ে স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নিলে তাদের মধ্যে বিয়ে পড়ানোর প্রয়োজন হয় না।
৭। এক তালাক অথবা দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে স্বামী ইচ্ছে করলে তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। এতে যেন স্ত্রীর অভিভাবকেরা বাধা সৃষ্টি না করে- (সূরা আল-বাকারাহঃ ২৩২)
৮। স্বামী তার স্ত্রীকে পরপর ৩টি তুহুরে বা ঋতুমুক্ত অবস্থায় তিন তালাক না দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তিন তুহুরে তিন তালাক দিলেও বিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ অবস্থায় ঐ স্বামী স্ত্রী আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না। তারা পুনরায় কেবল তখনই বিয়ে করতে পারবে যদি স্ত্রীটি স্বাভাবিকভাবে অন্য স্বামী গ্রহণ করে এবং তার সঙ্গে মিলিত হয় অতঃপর ঐ স্বামী মারা যায় বা স্ত্রীটিকে তালাক দেয়- বাকারাঃ ২৩০। উল্লেখ্য তিন তালাক হয়ে গেলে প্রথম স্বামীর সাথে বিয়ের জন্য অন্য পুরুষের সাথে মহিলাকে বিয়ে করে তার সাথে মিলন ঘটতে হবে এবং সে [দ্বিতীয় স্বামী] যদি কোন সময় স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় তাহলে প্রথম স্বামী পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।

♦হায়েজ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক হয় না

সালিম (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়িয থাকা অবস্থায় তালাক দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট উমর (রাঃ) এর বিধান জানতে চাইলেন। তিনি বললেনঃ তাকে তার স্ত্রীকে ফিরত নেওয়ার হুকুম দাও। অতঃপর সে যেন তাকে তুহরে (পবিত্র অবস্থা চলাকালে) অথবা গর্ভাবস্থায় তালাক দেয়।
সহীহ
(জামে আত তিরমীযি-১১৭৫,
ইবনু মাজাহ- (২০২৩), মুসলিম)
.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুগে তার ঋতুবতী স্ত্রীকে তালাক দিলেন। ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাকে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বলো এবং তুহর’ পর্যন্ত রেখে দিতে বলো। এরপর আবার হায়িয ও তার থেকে আবার পাক হওয়ার পর ইচ্ছা করলে সে তাকে রেখে দিবে অন্যথায় সহবাসের আগেই তালাক দিবে। মহান আল্লাহ এভাবে ইদ্দাত পালনের সুযোগ রেখে স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস।
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২১৭৯,বুখারী-৫২৫১)

♦কোন নারী যেন নিজ স্বার্থের জন্য এবং বিয়ে বসার জন্য তার বোনের/তার সতীনের তালাক না চায়।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কোন নারী যেন নিজ স্বার্থের জন্য এবং বিয়ে বসার জন্য তার বোনের তালাক না চায়। কেননা সে তাই পাবে যা তার জন্য নির্ধারিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২১৭৬)

♦স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার সময় সাক্ষী রাখতে হবে

মুতাররিফ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, এ ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এক তালাক দেয়ার পর পুনরায় তার সাথে সহবাস করেছে, অথচ তার তালাক প্রদান ও পরে ফিরিয়ে আনার সময় কাউকে সাক্ষী রাখেনি। তিনি বললেন, তুমি সুন্নাতের পরিপন্থী তালাক দিয়েছো এবং সুন্নাত বিরোধী নিয়মে তাকে ফিরিয়ে এনেছো। ভবিষ্যতে তালাক প্রদান ও ফিরিয়ে আনার সময় সাক্ষী রাখবে। পুনরায় এরূপ করবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২১৮৬)

♦হাসি-ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি কাজ এমন যা বাস্তবে বা ঠাট্টাচ্ছলে করলেও তা বাস্তবিকই ধর্তব্য। তা হলোঃ বিবাহ, তালাক ও স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২১৯৪,সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৩৯)

♦অহেতুক যে মহিলা তার স্বামীর নিকট তালাক চায় তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম হয়ে যায়

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন মহিলা অহেতুক তার স্বামীর নিকট তালাক চায় তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম হয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২২২৬,সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৫৫)

♦তালাকপ্রাপ্তা নারীর ইদ্দাত কাল ৩ হায়িয পর্যন্ত এবং যাদের হায়েজ হবার আশাংকা নেই তাদের ইদ্দতকাল ৩ মাস

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (আল্লাহর বাণী)ঃ “তালাক্বপ্রাপ্তা নারী তিন হায়িয পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবে” (সূরাহ আল-বাক্বারাহঃ ২২৮); এবং “তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের আর ঋতুবতী হওয়ার আশা নাই তাদের ইদ্দাত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দাতকাল হবে তিন মাস” (সূরাহ আত-তালাক্বঃ ৪)। এ দ্বিতীয় বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। অতঃপর আল্লাহ বলেছেন, “যদি তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দাও তাহলে তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোন ইদ্দাত নাই যা তোমরা গণনা করবে” (সূরাহ আল-আহযাবঃ ৪৯)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২২৮২)

♦তিন তালাক প্রাপ্ত‍া নারী, দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রথম স্বামী তার নিকট ফিরে আসতে পারবে না।

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়, ফলে ঐ মহিলা অন্য এক পুরুষকে বিয়ে করলে সে তার সাথে নির্জনবাস করার পর সঙ্গম না করেই তাকে তালাক প্রদান করেছে। এখন ঐ মহিলা কি তার প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ? তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সে প্রথম স্বামীর জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত হালাল নয় যতক্ষণ পরস্পর পরস্পরের মধুর স্বাদ গ্রহন (সহবাস) না করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(মুসলিম দাঊদ শরীফ-২৩০৯)

♦হিল্লা/হাললা বিবাহ হারাম
.
তিন তালাক দত্তা স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে এমন শর্তে বিবাহ দেয়া যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলনের পর পুরুষটি তাকে তালাক দিয়ে দেবে যাতে প্রথম পুরুষটি তার তিন তালাক দত্তা স্ত্রীকে আবার বিয়ে কতে পারে। এরকম শর্তাধীন বিয়ের ব্যবস্থাকে হালালা বলা হয় যা অত্যন্ত ঘৃণিত হারাম কাজ।(বুখারী-৫২৬০)

♦গর্ভাবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়
.
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার স্ত্রীকে হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমার (রাঃ) বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেনঃ তাকে বলো, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, এরপর সে চাইলে তাকে তুহর অথবা গর্ভবতী অবস্থায় তালাক দেয়।
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০২৩)
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

♦যে ব্যক্তি একই মজলিসে তিন তালাক দিলে তালাক হয়ে যায়।
.
আমির থেকে বর্ণিতঃ
আমি ফাতিমাহ্‌ বিনতু কায়স (রাঃ) কে বললাম, আপনার তালাকের ঘটনাটি আমাকে বলুন। তিনি বলেন, আমার স্বামী ইয়ামানে থাকা অবস্থায় আমাকে তিন তালাক দেয়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটিকে জায়িয বলে গণ্য করেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০২৪)

♦গর্ভাবস্থায় তালাকপ্রাপ্তা নারীর সন্তান প্রসবের সাথে সাথে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়।
.
যুবায়র ইবনুল আওওয়াম থেকে বর্ণিতঃ

উম্মু কুলসুম বিনতু উকবাহ (রাঃ) ছিলেন তার স্ত্রী। তিনি তার গর্ভাবস্থায় যুবায়র (রাঃ) কে বলেন, আমাকে এক তালাক দিয়ে সন্তুষ্ট করুন। তিনি তাকে এক তালাক দিলেন, অতঃপর সলাত পড়তে চলে গেলেন। তিনি ফিরে এসে দেখেন যে, তার স্ত্রী একটি সন্তান প্রসব করেছে। যুবায়র (রাঃ) বললেন, সে কেন আমাকে প্রতারিত করলো! আল্লাহ যেন তাকেও প্রতারিত করেন। এরপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বলেন: আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত তার ইদ্দাত পূর্ণ হয়ে গেছে। তাকে বিবাহের প্রস্তাব দাও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০২৬)

♦তিন তালাকপ্রাপ্তা নারী বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে না
.
ফাতিমা বিনতু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আবূ বকর) বলেন, আমি ফাতিমা বিনতু কায়স (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তার স্বামী তাকে তিন তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্যে বাসস্থান ও খোরপোষের নির্দেশ দেন নি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৩৫)
.
ফাতিমাহ বিনতু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময় আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দেয়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৩৬)

♦জড়বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি,নাবালেগ ও ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক হয় না।
.
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষন না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষন না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষন না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়। অধস্তন রাবী আবূ বাকর (রহঃ) এর বর্ণনায় আছেঃ বেহুঁশ ব্যক্তি যতক্ষণ না সে হুঁশ ফিরে পায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
[সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪১]

♦বল প্রয়োগে বাধ্য হয়ে অথবা ভুলবশত প্রদত্ত তালাক হয় না।
.
আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪৩)
.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতকে ভুল ,বিস্মৃতি ও জোরপূর্বক কৃত কাজের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪৫)
.
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জোরপূর্বক আদায়কৃত তালাক ও দাসমুক্তি কার্যকর হবে না।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪৬)

♦বিবাহের পূর্বে কোন তালাক নেই
.
আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তালাক দেয়ার অধিকার জন্মানোর আগে প্রদত্ত তালাক কার্যকর হয় না।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪৭)
.
মিসওয়ার বিন মাখ্‌মারাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিন বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিবাহের আগে তালাক নাই এবং মালিকানা লাভের আগে দাসমুক্তি নাই
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৪৮)

♦স্বামী তার স্ত্রীকে তালাকের এখতিয়ার প্রদান করলে তালাক হবে না
.
আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে (তার স্ত্রীত্বে থাকা বা তাকে ত্যাগ করার) এখতিয়ার প্রদান করেন। আমরা তাঁকেই গ্রহণ করি। সুতরাং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে তালাক গণ্য করেননি
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৫২

♦খোলা তালাক নিলে ইদ্দত পালন করতে হবে না
.
উবাদাহ থেকে বর্ণিতঃ

আমি মু’আব্বিয বিন আফরা’র কন্যা রুবায়’ (রাঃ)-কে বললাম, তুমি তোমার ঘটনাটি আমাকে বলো তো। সে বললো, আমি আমার স্বামীর থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলাম। অতঃপর আমি উসমান (রাঃ)-এর নিকট এসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে কিরূপে ইদ্দাত পালন করতে হবে? তিনি বলেন, তোমাকে কোন ইদ্দাত পালন করতে হবে না। তবে তোমার স্বামী খুব কাছাকাছি সময়ে তোমার সাথে সহবাস করে থাকলে তোমাকে তার নিকট এক হায়িদ কাল থাকতে হবে। রুবাই (রাঃ) বলেন, উসমান (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সেই সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেছেন, যা তিনি মারইয়াম আল-মাগালিয়ার ব্যাপারে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সাবিত বিন কায়স (রাঃ) এর স্ত্রী এবং তিনি স্বামী থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলেন
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
(সুনানে ইবনে মাজাহ-২০৫৮)

amatullah_farjana

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*